মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩

আমাদের ঘুম-ভাঙা'র ইতিহাস

জানি না কতকাল ঘুমিয়ে কেটে গেল !
টেবিলে আলো ফেলে সহসা মিসকল,
অলস কল-ব্যাকে: 'মুরাদপুরে আয় -
ডাচ-বাংলা'র মুখে দাঁড়াবো, আসবি তো?'

স্মৃতিরা জেগে ওঠে, ক্যান্ডি রেস্তঁরা
নিয়নে গম্ভীর জিইসি; তারপর
পাশ কাটিয়ে যায় ক্ষ্যাপাটে রাইডার
আমিও হেঁটে চলি। লক্ষ্য? - বিস্মৃত !

বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৩

গল্পকারের বউ

ঝুল-বারান্দা - মাটির টবে তিনটা কচি ফুলের চারা
আর বাতাসে অন্ধ-আবেগ তীব্রতর রং মেশালো
মেঘগুলো তাই ইতস্তত, ফুল দিল খুব ভুল ইশারা
একটা অবাক গল্প শুনে যেদিন তোমার মৃত্যু হল

এক পলকের স্বপ্ন দেখা, আর বারোমাস গেরস্থালি
পথের ওপর ঘর-সংসার; তারপরও কী উন্মাদনা -
ঘুম জাগলেই হাতছানি দেয় পবিত্র সেই স্বপ্নগুলি
অন্য সকল লোকের মতন 'অর্থকরী স্বপ্ন' তো না !

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৩

মা :: কাব্য-সংকলন




অর্ধশত সংগ্রহে ভূমিকা:
মাত্র ১০টি কবিতা দিয়ে শুরু করা এই সংকলনের কাব্য-সংগ্রহ ইতিমধ্যে ৫০ ছুঁয়ে গেল। এর মাঝে ব্লগারদের লেখা কবিতাও আছে ৩ (তিন)টি। বাকি প্রায় সবগুলোই বই-পত্র থেকে দেখে দেখে টাইপ করেছি - ভুল-ত্রুটি চোখে পড়লে জানাবেন নিশ্চয়ই। এই সংকলন করতে বসে 'মা'কে নিয়ে লেখা অসাধারণ সব কবিতা পড়ে ক্রমাগত মুগ্ধ হয়েছি, এবং এখনও হচ্ছি। সংযোজন অব্যহত থাকবে অবশ্যই...

রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৩

আশ্বিন

(আমাদের আশ্চর্য-আশ্বিনের গল্প; আমাদের তারা-ভরা-রাতের গান)


আমাদের গল্পটা অভিমানে ভরা তবে আশ্বিনে মিটমাট হয়ে যায়
নীল-রোদে কোনও এক অবুঝ অচেনা পাখি খুঁজে পায় তার গন্তব্য
বাতাস চমকে উঠে বুঝে ফেলে, ফুলগুলো পরাগায়নের তরে উদ্বেল
পৃথিবীর আরও কিছু সমাধান গতি পায় - কিন্তু তা বুঝে ফেলা দুস্কর।

আমাদের কবিতা বা আমাদের গানগুলো এইসব জানত না নিশ্চয়ই:
এই নিয়ে জোনাকের ব্যস্ততা দেখে তুমি চট করে হেসে ফেলো; তারপর
বিস্মিত জোনাকিরা সমালোচনায় মেতে রাগ করে চলে যায় বহুদূর।
কৌতূহলের বশে গল্প দেখতে এসে কৌতুকে মজে যায় ঈশ্বর !

বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

পাখির বাসা

দ্বন্দ্ব-সমাস
ওরা নাকি তোমার নামে লিখল কীসব দু-চার কলাম?
আমি ওসব গা করিনা - এই ভরসা রাখতে পারো:
আমি নাহয় তোমায় নিয়েই কষ্ট করে নষ্ট হলাম।

পথের গল্প পথেই বাড়ে, ঘরটা আমার পাখির বাসা;
নিয়মিত সত্য শোনার এখন আমার নেই পিপাসা
বিশেষ করে সত্য যখন উপমিত কর্মধারয়।

সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

মহীনের ঘোড়াগুলি (ত্রয়ী)



ঘোড়া
--- জীবনানন্দ দাশ

আমরা যাইনি ম’রে আজো -তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়:
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে;
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন - এখনো ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর 'পরে।

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

কী কথা তাহার সাথে? তার সাথে! (ত্রয়ী)




আকাশলীনা
--- জীবনানন্দ দাশ

সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি,
বোলো নাকো কথা ওই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা :
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ছবিব্লগ: বাংলাদেশের হৃদয় হতে...

[সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: আমি তেমন কোনও 'জাতের ফটোগ্রাফার' না। প্রথম ছবিব্লগ এটা, অধিকাংশ ছবিই মোবাইল ক্যামেরায় তোলা। অভিজ্ঞদের চোখে এইসব ভাল না লাগার একটা গড়পড়তা সম্ভাবনা দেখা যায়। তাই একটা থিম দাঁড়া করানোর খাতিরে প্রতিটা ছবি'র সাথে দু'টা করে লাইন জুড়ে দেয়া হল। বিজ্ঞাপণ শেষ; এবং আপনি পোস্টে আমন্ত্রিত।]

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

পূর্বাভাস

কেউ বলে মানুষটা অন্ধের মত ছিল - চোখে গাঢ় ছানি,
কেউ বলে বাম-পা'টা চলত না, কেউ বলে বাম হাতখানি
নিশ্চল ছিল; তবে ধীর পায়ে কোনও এক রাতের গভীরে
শান্ত সে বৃদ্ধটা এসে মিশেছিল এই নাগরিক ভীড়ে।

কেউ বলে বৃদ্ধটা বেশি কথা বলত না, খুব মেপে মেপে;
কেউ বলে, বড় বেশি জ্ঞান দিত; কেউ বলে, সব যেত চেপে।
বাস্তবে নগরীর সীমান্তে ছোট এক সরাইখানাতে
ক্লান্ত সে মুসাফির রাত'টা পোহালে তার পরদিন প্রাতে -

শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

দুঃসময়

ওরা লুটে-পুটে সব খেয়ে গেল তবে কিছু রেখে গেলে পারতো
দেখো নগরীতে আজ শিশুরা কেমন ভয়ানক শীতে আর্ত


ওরা মানুষের নামে বস্তু গড়েছে, বস্তুর নামে ঈশ্বর
ওরা খেয়ালের বশে জ্যামিতি বানালো এলোমেলো মহাবিশ্ব'র
তবু 'প্রমাণিত' হতে ঢের বাকি ছিল - গড়া সেই উপপাদ্যের
ফলে খাদ বেড়ে চলে কড়া অনুপাতে মনোদৈহিক খাদ্যের

আর যারা বাকি ছিল - বাঁচাবার মত - তারা শেষমেশ ব্যর্থ
ওরা তছনছ করে নিয়ে গেল সব - কিছু রেখে গেলে পারতো

শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৩

লিটল গার্ল

কাজ শেষ করে সায়েম যখন গাজীপুর চৌরাস্তায় এসে পৌঁছাল, ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা নেমে গেছে। দুপুরের পরপরই ঘোষণা হল - আগামীকাল হরতাল; তখনই মনে মনে প্রমাদ গুণেছে সায়েম, আজ বাসায় ফিরতে খবর আছে। চৌরাস্তায় এসে দেখে জনসমুদ্র। ঢাকামুখী কোনও বাস নেই। ময়মনসিং-শেরপুর থেকে আসা লংরুটের বাস তো নেই-ই, লোকাল বাস-ও খুব কালে-ভদ্রে একটা দুটা আসছে, আর মুহুর্তেই যাত্রী ওভারলোডেড হয়ে ছুটে চলে যাচ্ছে।
এ ধরণের ভীড় ঠেলে বাসে ওঠা সায়েমের পক্ষে সম্ভব না। এনোক্লোফোবিয়া না কী যেন বলে, সায়েমের বোধহয় ওই সমস্যাটা আছে। ভীড়-গ্যাঞ্জামের মধ্যে সে থাকতে পারে না, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। বেশ খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সায়েম উল্টাপথে হেঁটে রাস্তা পার হল। ঢাকামুখী বাস যেদিকে যাচ্ছে, সেদিকে না; বরং যেদিক থেকে বাসগুলো আসছে, রাস্তার সেই পারে গিয়ে দাঁড়াল সায়েম। এই পারে লোকজন বাস থেকে নামে, তখন যদি একটু কম ভীড়ের মাঝে বাসে উঠে পড়া যায়।

শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৩

লিটল বয়



গল্পটা শেষ হওয়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে থেকে আমি গল্পটা বলতে শুরু করলাম।

সাতসকালের গল্প। তিনতলার ওই নীল-শার্ট পড়া ছেলেটা ভোরবেলা থেকেই তার পুরানো গীটারে হালকা রিদম ধরেছে। নীচতলার ফলের দোকানদার তার দোকানের ঝাঁপ খুলে বেসাতি সাজাতে ব্যস্ত। রাস্তার ওপারে তিনজন বুড়োমানুষ চা-হাতে আড্ডায় বসা। যুদ্ধের অবস্থা খুব খারাপ, রাজধানীতে যখন-তখন বোমাবর্ষণ হচ্ছে - তাই এসব গল্প ছাড়া আড্ডায় অন্য কোনও টপিকের সম্ভাবনা আপাতত দেখা যায় না।

বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৩

তারাদের মানচিত্র



আজ আমি আপনাদের সবাইকে একটা করে টেলিস্কোপ দিতে এসেছি। রাতের আকাশ দেখার টেলিস্কোপ। বিনামূল্যে, ঘরে বসেই পাবেন; নেটের স্পিড ভাল থাকলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পেয়ে যাবেন হয়তো ! ঠিক আমি দেব না, আমি শুধু সন্ধানটুকু দিয়ে যাব। আর জিনিসটা এত্ত দারুণ, এ শুধু আপনাকে 'তারা' দেখাবে না, চিনিয়েও যাবে ! মহাকাশের অপার সৌন্দর্যে বিভোর হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে বসুন !

বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৩

আমাদের সময়ের রূপকথা

কিশোরী'র নজর না লেগে যায় !

গলিপথে সন্ধ্যার আন্ধার ঘুপচিতে
বেহেড মাতাল তার নিরলস ঘুম দিতে
বোতলের পাশে রাখে একরাশ চাপা-শ্বাস
অমনি তখন যেন আলো করে চারপাশ
অদ্ভূত এক ছেলে নেমে এল রাস্তায় -

বালিকার নজর না লেগে যায় !

বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: ক্লদ মনে' (Claude Monet)


ফ্রান্সের ইম্প্রেশনিস্ট শিল্পীদের প্রত্যেকের জীবনের গল্প নিয়ে একেকটা চমৎকার উপন্যাস লিখে ফেলা যায়; এই আন্দোলন নিয়ে বানানো কোনও সিনেমার কথা কেন শুনিনি - এটাই আমার কাছে এখন বিস্ময়কর লাগছে ! ক'টা তরুণ ছেলে-মেয়ের অদ্ভূত অ্যাডভেঞ্চার আর তারপর পৃথিবীর চিত্রশিল্পের ইতিহাসকে চিরতরে পাল্টে দেয়ার এক গল্প - ইম্প্রেশনিজম ! এদের মাঝে সাত জনের গল্প এই সিরিজ বলা হয়ে গেছে। আজ বলব ইম্প্রেশনিজমের প্রধানতম এক শিল্পীর গল্প - যিনি ছিলেন এই ধারার সবচেয়ে ধারাবাহিক আর গুরুত্বপূর্ণ একজন, ক্যানভাসের বুকে নতুন ঝলমলে জগৎকে গড়ে তোলার এক অন্যতম কারিগর, 'ইম্প্রেশনিজম' নামটাই এসেছে যার পেইন্টিংস থেকে, আমাদের আজকের শিল্পী - ক্লদ মনে' (Claude Monet)

বুধবার, ১২ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: পিয়ের-আগুস্তে রেনোয়া (Pierre-Auguste Renoir)


রেনোয়া - ইম্প্রেশনিস্টদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং প্রতিভাবান শিল্পীদের একজন। মানুষটা তার সারাটা জীবন ব্যয় করে গেছেন ক্যানভাসে, আর তাই তার প্রতিটা ক্যানভাস হয়ে উঠেছিল জীবন্ত ! যে চার-জন বন্ধু মিলে পরবর্তীতে একটা গ্রুপ তৈরি করে পৃথিবীর চিত্রশিল্পের ইতিহাস নতুন করে লিখতে শুরু করেছিল - রেনোয়া ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। এক দর্জি'র ছেলে'র শিল্পজগতের গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে ওঠার গল্প বলব আজ। যে ছেলের জীবনের অনেকটা সময়জুড়ে ছিল দারিদ্র আর কষ্টের ছড়াছড়ি - অথচ সারাটা জীবন সে এঁকে গেল এক আলোময় জগৎ, আনন্দময় এক্সপ্রেশনে ভরা সব মানুষজনের ছবি ! তাহলে গল্পটা শুরু করা যাক। ইম্প্রেশনিস্টদের সেই আলোকিত-আনন্দময় ভুবনে আপনাকে স্বাগতম !

সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: কামিল পিসারো (Camille Pissarro)



রবিবার, সাপ্তাহিক ছুটি'র দিন। দুপুর থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে একটানা। কফি বানিয়ে হোটেলরুমের জানালার পাশে এসে বসলাম - দেখতে লাগলাম বৃষ্টিভেজা এই অচেনা শহর আর শহরের মানুষগুলোকে। হঠাৎ মনে হল, আচ্ছা, এখন পিসারো উপস্থিত থাকলে তিনি কিভাবে দেখতেন এই জনজীবন? আর কিভাবেই বা এঁকে রাখতেন? যে মানুষটার প্রায় একক প্রচেষ্টায় পৃথিবীর পুরো চিত্রশিল্পের ইতিহাসই পাল্টে যেতে শুরু করেছিল, তার চোখে এক-পৃথিবী দেখার চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। কামিল পিসারো (Camille Pissarro) - তাকে বলা হয় 'ইম্প্রেশনিজম'-এর জনক। তবে এমন জনক না, যে জন্ম দেয়ার পরই সন্তানকে ছেড়ে-ছুড়ে চলে যায়; কামিল পিসারো ইম্প্রেশনিজমকে গড়েছেন, লালন-পালন করেছেন, আর শুধু 'শিল্প' না - সব 'শিল্পী'দের প্রতিও তিনি সবসময় থেকেছেন এক নিরলস অভিভাবকের মত। পিসারো যেন আরেক ক্লাসিক উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র! ব্যক্তিগত জীবনে তাকে প্রচুর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সারাটা জীবন; তাই যখনই কোনও শিল্পীকে তার মত সংগ্রাম করতে দেখেছেন, তিনি পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন ছায়ার মত। অথচ শিল্প-আন্দোলনের প্রাণপুরুষ হিসেবে তার মত একজনের আগমনটা ছিল আর্টের জগতে সবচেয়ে অদ্ভূতুরে ঘটনাগুলো'র মধ্যে একটা ! অদ্ভূত বলছি তার ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে ! একেবারে অকল্পনীয় একটা জায়গা থেকে উঠে এসে একটা ছেলে কিভাবে আর্টের ইতিহাস পাল্টে দিল - আজ বলব সেই গল্প ! ইম্প্রেশনিস্টদের ঝলমলে দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম !

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

অন্য একটা রূপকথার গল্প




তখনও নিথর চোখে অবাক তাকিয়ে ছিল নির্যাতিতা রাজকন্যা
তখনও শব্দগুলো বাতাসে ছড়িয়ে ছিল - বিচ্ছিন্ন তবে ভরপুর;
মানসিক আদালতে রায় হয়ে গেছে তার - যাবজ্জীবন কারাদন্ড !
এবং এসব জেনে তখন তোমার মত রাজকন্যার চোখ টলমল...

শুক্রবার, ৭ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: গুস্তাভ কাইবট (Gustave Caillebotte)


ফ্রান্স, উনিশ শতকের শেষার্ধ। বলা নেই, কওয়া নেই - একদম হঠাৎ করেই যেন কোত্থেকে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী এসে প্রথাগত আর্ট একাডেমি'র বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করে বসল; শুরু হল এক বিস্ময়কর অ্যাডভেঞ্চারের গল্প। আর হাতে-গোণা ওই ক'টা ছেলে-মেয়ে এত বেশি প্রতিভাবান ছিল যে, একদিন তারা বিশ্বের চিত্রশিল্পের ইতিহাসই পাল্টে দিল চিরদিনের মত ! 'ইম্প্রেশনিস্ট'-দের কথা বলছি ! মনে', রেনোয়া', দেগা', পিসারো, সেজান... - প্রত্যেকে একত্রিত হচ্ছিলেন পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়ার জন্য ! চিন্তাধারা'য় সবার মাঝে মিল ছিল, কিন্তু কাজের ধারায় প্রত্যেকে ছিলেন পুরোপুরি ইউনিক আর অসাধারণ পর্যায়ের ! এদের মাঝে একজন ছিলেন খুব অন্যরকম; প্রতিভার কমতি ছিল না, কিন্তু কেন জানি খুব বেশি অপরিচিত; ইম্প্রেশনিজমের এক অপরিহার্য চরিত্র, কিন্তু ইম্প্রেশনিস্টদের নাম নিতে গেলে তার কথা তেমন মনেই আসে না - তিনি ফ্রান্সের ধনকুবের শিল্পী গুস্তাভ কাইবট (Gustave Caillebotte)। শুধু ইম্প্রেশনিজমের সময়ের না, কাইবট'এর দেখার চোখ ছিল অন্য যেকোনও সময়ের শিল্পীদের থেকে একদমই আলাদা ! তার ছবি'র গল্পটা শোনার পর আপনি নিজেও হয়তো চেনা-পরিচিত পৃথিবীটাকে একদম নতুনভাবে আবিস্কার করতে পারেন ! অতএব, প্রস্তুত হয়ে বসুন - আজকে আমরা কাইবটের চোখে এক পৃথিবী দেখতে যাচ্ছি !

বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: ফ্রেডরিখ বাযিল (Jean Frédéric Bazille)



ছবি'র জগতে ফ্রান্সের 'ইম্প্রেশনিজম' আন্দোলনের সূচনা হয় একদল অ্যাডভেঞ্চারাস তরুণ-তরুণী'র হাত ধরে ! সনাতন সব নিয়ম-কানুন ভেঙে এই ছেলে-মেয়েগুলো এঁকে যাচ্ছিল একের পর এক আলো আর উচ্ছাসে ভরা জীবনের বাস্তব সব পেইন্টিংস ! কিন্তু একই সময়ে তাদের ব্যক্তিজীবনে নেমে আসছিল নানারকম বিপর্যয় আর সম্ভাবনা, কমেডি আর ট্রাজেডি'র খেলা। আজ বলতে এসেছি এক ট্র্যাজিক হিরো'র গল্প - যে শিল্পী এসেছিলেন অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে, কিন্তু পরিণত বিকাশের সময় তিনি কখনও পান নি। যে চার বন্ধু'র হাত ধরে 'ইম্প্রেশনিজম'-এর যাত্রা শুরু, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন - ফ্রেডরিখ বাযিল (Jean Frédéric Bazille)।

আমাদের ঘুম-ভাঙা'র ইতিহাস

জানি না কতকাল ঘুমিয়ে কেটে গেল !
টেবিলে আলো ফেলে সহসা মিসকল,
অলস কল-ব্যাকে: 'মুরাদপুরে আয় -
ডাচ-বাংলা'র মুখে দাঁড়াবো, আসবি তো?'

স্মৃতিরা জেগে ওঠে, ক্যান্ডি রেস্তঁরা
নিয়নে গম্ভীর জিইসি; তারপর
পাশ কাটিয়ে যায় ক্ষ্যাপাটে রাইডার
আমিও হেঁটে চলি। লক্ষ্য? - বিস্মৃত !

বুধবার, ৫ জুন, ২০১৩

ইম্প্রেশনিস্ট আর্টিস্ট :: জর্জ স্যুরা' (Georges-Pierre Seurat)


চিত্রশিল্পে ফ্রান্সের 'ইম্প্রেশনিজম' আন্দোলন ছিল এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী শিল্পী'র এক অসাধারণ অ্যাডভেঞ্চার গল্পের মত ! সাহসী দৃষ্টিভঙ্গি আর বিস্ময়কর প্রতিভা (BBC'র ভাষায় 'Annoying talent' !!) দিয়ে তারা তৈরি করে যাচ্ছিলেন চিত্রশিল্পের নতুন ইতিহাস, সৃষ্টি করে যাচ্ছিলেন একের পর এক বাস্তব আর জীবন্ত সব পেইন্টিংস ! ব্যক্তিজীবনে তাদের কেউ কেউ ছিলেন ছবিগুলো'র মতই উদ্দাম আর প্রাণবন্ত, আবার কেউ ছিলেন গাঢ়-রকমের রহস্যময়। সবচেয়ে চাপা-স্বভাব আর রহস্যময় শিল্পী'র নাম নিতে গেলে সবার আগেই চলে আসবে সম্ভবত জর্জ স্যুরা' (Georges-Pierre Seurat)-এর নাম। মাত্র ৩১ বছর বয়সে মারা যাওয়া এই শিল্পী'র জীবন আর বিস্ময়কর শিল্পকর্মের বেশিরভাগই আজও রয়ে গেছে চরম রহস্যে ঘেরা ! আজ বলব 'জর্জ স্যুরা' নামে শিল্পজগতের এক বিস্ময়-বালকের কথা। ক্যানভাসে কিছু রঙের ম্যাজিক দেখার জন্য প্রস্তুত হয়ে বসুন! ইম্প্রেশনিজমের রং-ঝলমলে জগতে আপনাকে স্বাগতম !

সোমবার, ৩ জুন, ২০১৩

শূন্য চেয়ার, শূন্য চায়ের কাপ...



চারটা দেয়াল - ইটের উপর ইট
মধ্যে কয়টা ক্লান্তিবিহীন প্রাণ;
একটা রাস্তা - বিষন্ন কংক্রিট
ওতেই তোদের নিস্তরঙ্গ গান

ই-মাইনর টলমলে নিষ্পাপ
ব্যস্ত পথে হারিয়ে ফেলা সুর;
শূন্য চেয়ার, শূন্য চায়ের কাপ -
হাতের মুঠো'র জীবনটা কদ্দূর?

শনিবার, ১ জুন, ২০১৩

'যুদ্ধ এবং শৈশব/কৈশোর' নিয়ে নির্মিত দেখার মত কয়েকটা ছবি




থিম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এ পর্বের মুভিগুলো হবে খানিকটা স্পর্শকাতর। আগের পর্বের মত এবারেও কোনও হলিউড ফিল্মের জায়গা হয়নি, আর এই ছবিগুলো আমার দৃষ্টিতে সত্যিকারের মনে দাগ কাটার মত।
এই প্রসঙ্গে আমার সবচেয়ে প্রিয় মুভিটা একটা বহুবিখ্যাত ইতালিয়ান সিনেমা - Roberto Benigni'র Life Is Beautiful (Italian: La vita è bella)। ধারণা করছি, এই মুভিটা প্রায় সবার দেখা, তাই রিভিউতে এই মুভি রাখিনি। তবু যদি কারও অদেখা হয়ে থাকে, তবে তাদেরকে বলব, এই সিনেমা না দেখে মারা যাওয়াটা ঠিক না। মুভিটা শেষ করার পর 'সিনেমা' সম্পর্কে আপনার ধ্যান-ধারণা আর অনুভূতি জায়গাটা নড়ে উঠবে। একই সাথে কমেডি আর ট্রাজেডি'র এমন অপূর্ব সমন্বয়ের আর কোনও উদাহরণ আছে কিনা আমি জানি না। আমার মুভি-দেখা জীবনে 'লা ভিতা এ বেলা' একটা ল্যান্ডমার্ক হয়ে থাকবে।

ভূমিকা শেষ করে পোস্ট শুরু করছি। এবং এবারের পাঁচটা মুভিও যথারীতি ভিন্ন ভিন্ন দেশের এবং পাঁচটা বিভিন্ন ভাষার।

সোমবার, ২৭ মে, ২০১৩

নারী-জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত দেখার মত কয়েকটা ছবি



পাঁচটা ভিন্ন দেশের পাঁচটা চলচ্চিত্র। আরও ভালভাবে বলতে গেলে পৃথিবী'র পাঁচটা ভিন্ন অঞ্চলের (দূর প্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য, মধ্য ইওরোপ আর স্ক্যান্ডিনেভিয়া), তাই পাঁচটা সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্কৃতিতে নারী'দের জীবন নিয়ে নির্মিত পাঁচটা চলচ্চিত্র নিয়ে এই পোস্ট। চলচ্চিত্র'কে আমি 'নারীবাদী' নামে কোনও ক্যাটাগরিতে ফেলতে চাই না, তবে এই পোস্টের মুভিগুলো বাছাই করেছি বিভিন্ন কালচারে নারী'দের জীবনের গল্প থেকে। মুভি বিষয়ে আমার প্রথম পোস্ট এটা। দেখা যাক কেমন হয়। 

মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৩

ছবি [আরেকটা (প্রায়) ডিটেকটিভ গল্প]

এক.

তানিয়া ঘরে ঢুকেই দেখতে পেল ইনস্পেক্টর ওয়াদুদ ড্রয়িংরুমে সোফায় আধশোয়া হয়ে আছেন। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, লাইট অন করা হয় নি; ঘর অন্ধকার।
"কী হল, পাপা? শরীর খারাপ?"
"না মা। তোর কী খবর? ক্লাস কেমন চলছে?"
তানি মিস্টি হাসল। ওয়াদুদের হঠাৎ মনে হল, তিনি কেমন বহিরাগতের মত প্রশ্ন করছেন ! ব্যস্ততার কারণে মেয়ের সাথে কতদিন গল্প করা হয় না আর। ওয়াদুদ আধশোয়া থেকে উঠে বসলেন, "আয় তোর সাথে আজ কিছুক্ষণ গল্প করি। অনেকদিন তোকে সময় দেয়া হয় না..."
"তুমি বসো, পাপা", তানি হেসে তাকালো, "আমি একটু ফ্রেশ হয়ে চা করে নিয়ে আসি। চা খাবে তো?"
তানি অন্ধকারেই দেখতে পেল ওয়াদুদ হাসিমুখে সায় জানালেন।
চায়ের কাপ হাতে তানিয়া রুমে ঢুকতেই ওয়াদুদ হঠাৎ আচমকা প্রশ্ন করে বসলেন, "আচ্ছা তানি, তুই তো অনেক পড়াশোনা করিস। মডার্ন আর্ট সম্পর্কে তোর কী ধারণা বল তো?"

রবিবার, ১৯ মে, ২০১৩

খুন ! [একটা (প্রায়) ডিটেকটিভ গল্প]

এক.

মৃত্যুর ঠিক আগ মুহুর্তে রাজিব রায়হান তার বুদ্ধিমত্তার শেষ নিদর্শনটা রেখে গেলেন। তার খুনিরা তখনও তার লিভিংরুমে, একে একে তাদের উপস্থিতি'র সব আলামত ধ্বংস করছে। বোঝা যাচ্ছে, এরা প্রচন্ড প্রফেশনাল আর সতর্ক। তাকে এমন কোনও সুত্র রেখে যেতে হবে যেটা এরা ধরতে পারবে না, কিন্তু পরে হয়তো কেউ এসে বুঝে নেয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অবিরাম রক্ত ঝরছে, রাজিব রায়হান পরিস্কার বুঝতে পারছেন, তার হাতে সময় খুব কম।

সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৩

ভোররাতে জংশনে

একটা জোনাক ফুলের মালা অমন মল্লিকা রাত্তিরে
তোমার গল্পগুলো থেকে আমার স্বপ্নগুলো ছিড়ে
অমন ডুব দিলো, ডুব দিলো - ওসব শুধুই স্বপ্ন ছিলো?
আমার জানার বাকি আছে, আমার অনেক জানার বাকি !

তবু বনলতা সেন-এর ঘরে ওরাই আগুন লাগায়
যারা রাতদুপুরে কান্না করে চাঁদ-তারাকে রাগায়
যারা কাব্য লিখে চলে, শুধুই লেখার কৌতূহলে
যারা স্বপ্ন দেখার ভাণ করে আর স্বপ্নকে দেয় ফাঁকি

রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

কবি আর গীতিকার



গীতিকারের চোখে সেদিন আলোর প্রতিফলন 
কবি'র হাতে - নিঃশব্দ স্বপ্নের সংকলন। 

চাকার নীচে রাস্তা ছুটে জোরসে উল্টোদিকে 
ধুলোর শহর স্বপ্ন বোনে বিভিন্ন আঙ্গিকে 
সবুজ গাছে লাল ফেস্টুন - ধূসর টি-এস-সি'তে 
রিকশা ভাসে নীল বিলাসে ফেব্রুয়ারী'র শীতে