সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৩

ভোররাতে জংশনে

একটা জোনাক ফুলের মালা অমন মল্লিকা রাত্তিরে
তোমার গল্পগুলো থেকে আমার স্বপ্নগুলো ছিড়ে
অমন ডুব দিলো, ডুব দিলো - ওসব শুধুই স্বপ্ন ছিলো?
আমার জানার বাকি আছে, আমার অনেক জানার বাকি !

তবু বনলতা সেন-এর ঘরে ওরাই আগুন লাগায়
যারা রাতদুপুরে কান্না করে চাঁদ-তারাকে রাগায়
যারা কাব্য লিখে চলে, শুধুই লেখার কৌতূহলে
যারা স্বপ্ন দেখার ভাণ করে আর স্বপ্নকে দেয় ফাঁকি


ওরা সবই নিয়ে গেল - তুমি দেখতে কি পারছো না?
তুমি চোখ না তুলেই বলো, "ওসব দেখতে হয় না, সোনা"
যখন ওদের তরে জোনাক নামে ফুটপাতে মিছিলে
তুমি আঙ্গুলে চাঁদ তুলে কেমন তাক লাগিয়ে দিলে !
আমি অবাক হয়ে থাকি, আমি অবাক হয়ে থাকি !

আমি পাপীর দলে নাম লেখালাম তোমার চোখের জলে
তখন জোনাক এসে মিশল আমার কাঁচপোকাদের দলে;
বুঝি, আমিই তখন শিকার, আবার আমিই তখন ঘাতক
তুমি বললে হেসে, "পাগল, তুমি কাব্য রাশি'র জাতক,
এখন চুপ করো আর আমি তোমার হাতটা ধরে রাখি"

তখন অবাধ হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে ভোররাতে জংশনে
আমার কাব্য থাকে আটকে তোমার ইচ্ছেমতন মনে
আমার কাঠবাদামের পথজুড়ে স্রেফ পাথর এবং ধুলো
আমি পারছি না, পারছি না - তখন বলল সে ফুলগুলো,
"আমরা স্বপ্নে বাঁচার দলে, তুমি অন্য দলে নাকি?"

মানুষ বাঁচতে শিখে যখন থাকে স্বপ্নের আশেপাশে
যখন রাত ঘুমিয়ে পড়ে, যখন সূর্য উঠে আসে
যখন ভাসতে থাকে নীল দুপুরে ভ্যাবচেকা জোনাকি
তুমি জানতে ওসব আগেই; আমার জানার ছিল বাকি।


ছবি: যখন রাত ঘুমিয়ে পড়ে, যখন সূর্য উঠে আসে [নিজস্ব অ্যালবাম]


এটা সম্ভবত গত সেপ্টেম্বরে লেখা। থিমটাও তাই 'স্বপ্ন দেখার জেদ আর বাঁচতে শেখার গান'। তো হঠাৎ ইচ্ছা হয়েছিল একটা গভীর বিষাদ কবিতা লিখতে। শুরু করেছিলাম বিষন্নতায়। কিন্তু কবিতা বিষয়টাই এমন যে লিখতে লিখতে কবিতাই আমার বিষাদ কাটিয়ে দেয় ! গভীর বিষাদ কবিতায় আমি তাই ব্যর্থ। আর এই ব্যাপারটাতে আমি ব্যর্থই থাকতে চাই !

এই কবিতায় স্মরণ করছি সব বিষাদী কবি'দের~

যারা রাতদুপুরে কান্না করে চাঁদ-তারাকে রাগায়
যারা কাব্য লিখে চলে, শুধুই লেখার কৌতূহলে
যারা স্বপ্ন দেখার ভাণ করে আর স্বপ্নকে দেয় ফাঁকি



অন্যত্র প্রকাশঃ http://www.somewhereinblog.net/blog/shahedk/29799970

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন