বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ, ২০১২

ভীষনরকম অন্য মানুষ!

(সাতসকালের কিছু গল্প) 

১. 

কী বলব আর; গল্পকথায় 
ইচ্ছেমতন যখন-তখন 
ঢেউগুলো সব মাছ হয়ে যায় 
মাছগুলো ফের পাখির ডানায় 
ঢেউগুলোকেই গল্প বানায়! 

দুজন মানুষ এসব নিয়েই গল্প করে 
গল্প করে। 
সেই যেখানে সকাল-সাঁঝে, কিংবা হঠাৎ রাতদুপুরে 
মেঘ করে আর ভীষণ ঝড়ে 
বজ্রনিনাদ! 

সেই ঝড়েতে চিঠির বাহক পথ হারালে, 
গল্প তখন একটু থামে; 
যে না-বোঝার সেই বুঝে, আর 
সেই ছেলেটার কপাল ঘামে 
জ্বর সেরে যায় - টের পায় সে। 

টের পায় সে। 
কষ্ট'রা তাই খুব আয়েশে তখন তাকে আঁকড়ে ধরে ! 
আঁকড়ে ধরে। 

চিঠির বাক্সে জমাট ধুলো 
লাস্ট লোকালও বিরতিহীন 
ডাকপিয়নের ঘুম না ভাঙায় গল্পগুলো পৌঁছে না আর 
মানুষ দু'টা রাত্রি কী দিন 
অপেক্ষাতে, 
ভীষণরকম। 
গল্পগুলো হয় না বলা। 

সেই ছেলেটা ধুলো'র বাক্সে 
ফুঁ দিলে ফের কালবোশেখী ! 
আর মেয়েটা জমাট জলে কাটাচ্ছে তার 
কাল বসে কি? 

দুজন মানুষ অপেক্ষাতে 
কার কিবা যায়-আসে তাতে? 
অন্য শহর, অন্য ঘরে, রাত পোহালে 
রাত পোহালে 
কেউ জানে না, কিন্তু তারা 
একই সাথে দুজন বলে- 


'শুভ সকাল, এলোমেলোতা !' 




উৎসর্গ: মাহী ফ্লোরা। ব্লগপোস্টে আমার কোনও ব্লগারকে উৎসর্গ করার ২য় ঘটনা এটা। এর আগে একটা করেছিলাম। আমার উৎসর্গের নিয়মানুযায়ী, এই লেখা আর নিজের নামে দাবি করার অধিকার রাখি না। মাহী'র একটা চমৎকার কবিতায় কমেন্ট করতে গিয়ে এটা লিখে ফেলা (এখানে ২৫ নম্বর কমেন্ট)। যেহেতু তার কবিতায় অনুভূতি জানাতে গিয়েই আমার এটা লেখা, তাই উৎসর্গের কথা আলাদা করে না বললেও এটা তার'ই থাকত। আমি শুধু শেয়ার করলাম এখানে। 




২. 

সাতসকালের অন্য কিছু গল্প থাকে, 
ওসব গল্প বলতে আসা আজ তোমাকে। 

সকালবেলার গল্পগুলো একটু যেন অন্যরকম 
দিনের অন্য সময় থেকে খুব আলাদা 
এবং তাতে - 
তুমি নিজের অচেনা মুখ দেখতে পেলে কি আয়নাতে? 

চায়ের চুলো বেখেয়ালে বাড়িয়ে দিলে - 
পানিগুলো শুকিয়ে গেল, 
পাতাগুলো একলা পড়ে রইল তলায় 
অবহেলায়। 
আচ্ছা, তুমি এমন হয়ে গেলে কেন? 

বাম চোখেতে খানিক আঁধার; 
ও কিছু না। মাইগ্রেন-ই তো। 
পৃথিবীর'ও মাইগ্রেন আজ - 
সবই কেমন আঁধার আঁধার ! 
এবং আমি জানি ওসব তুমিও জানো। 

কিসের ভয়ে খুলছো না ওই বাক্স, বোকা? 
খালিই ওটা ! হয়তো বা না ! 
কী যে ভাবো - 
কী যন্ত্রণা ! 

হোমিওপ্যাথের শিশি থেকে ড্রপার দিয়ে আলতো তোলা 
দু'তিন ফোঁটা ওষুধ, সেটা খানিক জলে মিশিয়ে গেলা 
সেই কবেকার স্মৃতির মত - 
আজকে তুমি পানির সাথে অনুভূতি গিলছো নাকি? 

ভোরের পাখি এত্ত জোরে ডাকে কেন? 
কী যন্ত্রণা ! কী যন্ত্রণা ? 

গল্পটা শেষ করবে বলে 
হঠাৎ তুমি দৌড়ে গিয়ে চিঠির বাক্স টেনে খুলো ! 

পেলে এবার নতুন কিছু? 
নতুন ধুলো? 




উৎসর্গ: আমাকে ! আমার লেখা উপরের প্রথম কবিতা'টা পড়েই এটা লিখে ফেলা ! তবে থিম সেই আগেরটাই। চিঠির বাক্সে ধুলো। 




পোস্ট শেষে: তবে পোস্টের শিরোনাম'টা স্পষ্ট হল না। মানুষগুলো অন্যরকম কিসে? কেনই বা? নাকি চেনা মানুষই নিজেকে হঠাৎ অন্যরকমভাবে দেখতে পাচ্ছে? ব্যাপারটা পরিষ্কার হওয়া গেল না। 

এসব তাই পাঠকের চিন্তা-ভাবনার উদারতা অথবা স্বাধীনতা'র অন্তর্গত বিবেচনা করে আপাতত নিশ্চিন্ত হলাম।


অন্যত্র প্রকাশঃ http://www.somewhereinblog.net/blog/shahedk/29554435

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন